স্ত্রীকে চিফ অফিসারের বার্তা

‘টাকা না দিলে সবাইকে একে একে মেরে ফেলতে বলেছে’

News Desk    |    ০১:৩১ পিএম, ২০২৪-০৩-১৩


‘টাকা না দিলে সবাইকে একে একে মেরে ফেলতে বলেছে’

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীর কাছে একটি অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার মাগরিবের পর মুঠোফোনে এই বার্তা পাঠান তিনি।

অডিও বার্তায় আতিক বলেছেন, ‘আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিয়ো।’

মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাওয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। জলদস্যুদের কবলে পড়া চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের এই জাহাজটি পরিচালনা করছে গ্রুপটির সহযোগী সংস্থা এস আর শিপিং লিমিটেড। জাহাজে আতিক উল্লাহসহ ২৩ বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন। 

আতিকের বাড়ি চন্দনাইশের বরকল এলাকায়। মা, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন শহরের নন্দনকানন এলাকায়। জিম্মি হওয়ার খবরের পর থেকেই মা শাহানুর আকতার কখনো কাঁদছেন, কখনো-বা নামাজে দাঁড়িয়ে দোয়াদরুদ পড়ছেন।

আতিকের মা বলেন, ‘আতিক জানিয়েছেন যে তারা সবাই জাহাজের একটা কেবিনে বন্দী। তাদের সোমালিয়া নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। আড়াই দিনের মতো লাগবে ওখানে পৌঁছাতে।’ ছেলে সবার জন্য দোয়া চেয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহানুর। তিনি জানান, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে ছেলের জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়ার কথা জানতে পারেন তিনি।

তবে মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে আতিক জলদস্যুদের কবলে পড়তে যাওয়ার বিষয়টি আঁচ করেছিলেন বলে ধারণা করছেন স্বজনেরা। সে সময় ফোনে আতিক তার স্ত্রী মিনা আজমিনকে বলছিলেন, ‘কয়েক দিন আমাকে ফোনে পাবে না। আমি নেটওয়ার্কের বাইরে থাকব।’

গতকাল মাগরিবের পর আতিক যখন শেষবার ফোন করেন, তখন স্ত্রী মিনা নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন মেজ মেয়ে উনাইজা ফোন ধরে। আতিক মেয়েকে তখন শুধু বলেন, ‘আম্মুকে বলো দোয়া করতে। আমাদের ফোন নিয়ে নিচ্ছে।’

অতটুকু বলেই ফোন কেটে দেন আতিক। এরপর অডিও ভয়েস হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। এর পর আর ফোন খোলা পাওয়া যায়নি আতিকের।